ঠোঁটে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট বা লিপস্টিক ইউজ করার কারণে ঠোট কালো হয়ে যায়। এ কালো ঠোঁটকে লাল করার বা গোলাপি করার জন্য অনেকে অনেক ধরনের ক্রিম ইউজ করে থাকেন। অনেকে আবার ক্রিম ইউজ করে কাঙ্খিত ফলাফল না পেয়ে হতাশ হয়ে যান।
ঠোঁটকে লাল বা গোলাপি করার জন্য বেশ কিছু ক্রিম রয়েছে তবে সে ক্রিমটা সবার জন্য প্রযোজ্য হবে সেটা কিন্তু নয়। কারণ একেক জনের ত্বকের ধরন একেক রকম। এজন্য সঠিক ক্রিমটি বাছাই করতে হবে। স্ক্রু লিপস স্ক্রাব ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করার জন্য খুবই কার্যকরী একটি প্রোডাক্ট।
স্ক্রু ক্রিম যার ঠোটের উপর হালকা ভাবে মেসেজ করতে হয়। খুব সফট এটি ইউজের সাথে সাথে চেঞ্জিং দেখা যায়। ময়লা উঠে আসে এতে কালচে ভাব বের হয়ে ঠোঁট গোলাপি হয়। মরা কালো চামড়া বের করে আনে। এ ক্রিমটির বিশ্বজুড়ে অনেক রিভিউ আছে।
এই ক্রিমটি লাগিয়ে ভালোভাবে ক্রাব করতে হয়। এতে ঠোটের ময়লা উঠে ফাটা ও ঠোঁটের কালো দাগ দূর হয়। এটা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে লিপে এপ্লাই করতে হবে আর সকালে উঠে ঠোঁট ভালো করে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে।
কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায়
আমরা কমবেশি অনেকে ঠোঁটে লিপস্টিক ইউজ করি। আর এ কারণে ঠোঁট কালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কালো ঠোঁটকে আমরা লাল বা গোলাপি করার জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকি। কালো ঠোঁট লাল বা গোলাপি করার অনেক উপায় রয়েছে।
* প্রথমে ঠোঁটের মেকআপ যথাযথভাবে পরিষ্কার করতে হবে। আমরা যারা ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার করি তারা সেই লিপস্টিক যথাযথভাবে পরিষ্কার করি না। যে কারণে ঠোঁট আস্তে আস্তে কালচে হয়ে যায়।
তাই লিপস্টিক ব্যবহার করলেও তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এজন্য ঠোঁটে ডাবল ক্লিনজিং করা বেশ দরকার।
* ঠোটে স্ক্রাব ব্যবহার বন্ধ করা। যত মিহিদানাই হোক না কেন তা ঠোঁটের জন্য ভালো না। ঠোট আমাদের শরীর বা মুখের ত্বকের চেয়ে অনেক বেশি পাতলা।
ত্বকে যে সেলুলাইলিজ থাকে ১৬ টি ঠোঁটে তা থাকে মাত্র পাঁচটি। তাই মুখের জন্য যে স্ক্রাবটি ভালো কাজ করবে সেটি ঠোটের জন্য নাও করতে পারে। ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি ইউজ করা ভালো।
* ঠোঁটে এস পি এফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করা। বর্তমান সময়ে এসপিএফ যুক্ত অনেক ধরনের লিপস্টিক বা লিপবাম পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠোঁট কালো হওয়ার সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
* ফিজিকেল সান প্রটেকশন নিতে হবে। দীর্ঘক্ষণ যদি রোধে থাকা হয় তাহলে অবশ্যই ফিজিক্যাল সান প্রটেকশন অর্থাৎ সানগ্লাস, চওড়া হ্যাট, ছাতা বা মাস্ক ব্যবহার করা খুবই জরুরী।
* নকল, নিম্নমানের বা মেয়াদ উত্তীর্ণ লিপ প্রোডাক্ট ব্যবহার না করা। একটি ভালো মানের লিপস্টিক যদি সঠিক নিয়মে সংরক্ষণ করা হয় তাহলেও তা দুই বছরের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।
তাই যে প্রোডাক্টটি ঠোটে ব্যবহার করা হয় তা যেন অবশ্যই মেয়াদ উত্তীর্ণ না হয়। যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ কোন লিপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হয় তাহলেও তা ঠোঁটকে দিনে দিনে কালচে করে ফেলে।
* এলার্জিক বা ইরিটেটিং উপাদান এড়িয়ে চলা। ঠোঁটে যে লিপ প্রোডাক্ট ইউজ করা হোক না কেন সেটা যদি শুট না করে তাহলে সেটা এড়িয়ে চলতে হবে। ঠোঁটে ইরিটেটিং হয় এমন কোন প্রোডাক্ট ইউজ করা যাবে না এতে করে ঠোঁট ধীরে ধীরে কালো হয়ে যাবে।
* ঠোঁট বারবার জিব্বা দিয়ে ভেজানো যাবে না।
* তাছাড়া ঠোঁটের মরা চামড়া হাত দিয়ে টেনে উঠানো যাবে না।
* লিপ স্ল্যবিং-প্রতি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ঠোঁটে পুরু করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে নিতে হবে এবং সকালে উঠে তা ফেসওয়াশ দিয়ে বা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে দিনের বেলাতে ভাজলিন ব্যবহার করলে খুব বেশি ক্ষতি হবে না।
* নিজের এশিয়ান বৈশিষ্ট্যটা মেনে নেওয়া। সাউথ এশিয়ান যারা তারা জেনেটিকলি অধিক মেলানিন এর অধিকারী। অধিক মেলানিনের ছাপ যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলতে পারে তেমনি ঠোটেও প্রভাব ফেলে থাকে।
এজন্য ঠোঁট কালো হয়ে থাকে। ছোটবেলায় ঠোঁটের রং না থাকলেও তা ধীরে ধীরে কালচে হয়ে যায়। তাছাড়া অনেক ধরনের মেডিসিন খাওয়ার কারণেও সেই প্রভাব ঠোঁটে পড়তে পারে।
ঠোঁটের কালো দাগ দূর করার ক্রিম
শীত বা গরমকালে আমাদের অনেকে ঠোঁট ফাটা বা কালচে ভাব দেখা যায়। বিশেষ করে শীতকালে ঠোঁটের সমস্যাটি কমবেশি সবারই দেখা যায়। ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে সবসময়ই আমরা শীতকালে মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা ভেসলিন ব্যবহার করে থাকি।
যা শুধু ঠোঁটকে কোমল বা নরম রাখতে সাহায্য করে। আমাদের ঠোঁটে সেন্সেটিভ মেমব্রেন আবরণের একটি পাতলা লেয়ার থাকে তাই একাধিক লেয়ার না থাকায় ঠোঁট ফাটা বা কালচে ভাব দেখা যায়। সেই সাথে রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে।
অনেকে ঘরোয়া উপায়ে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করার চেষ্টা করে থাকেন তবে অনেক সময় সেটা কাজ না করেও থাকতে পারে।
হ্যাঁ সে ক্ষেত্রে কিছু ক্রিম রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। যখন ঠোঁটে কালো দাগের কথা আসে তখন সঠিক কোন ক্রিম ব্যবহার করবেন তা খোঁজা একটু কঠিন মনে হয়।
কেননা ঠোঁটের কালো দাগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকেও ঠোঁট কালো হয়ে থাকে। কিন্তু এখন লিভ ব্রাইট করার জন্য বাজারে বেশ কিছু ক্রিম এসেছে এর মধ্যে লিপ স্লিপিং মাস্ক, ক্লোভেট, স্ক্রু ক্রিম, বেশ জনপ্রিয়।
আপনারা ত্বকের যত্নে ডেইলি রুটিনে ক্রিম গুলো এড করে নিতে পারেন। এর ক্রিমগুলো ঠোঁটের পিগমেন্টেশন রিমুভ করে এবং ঠোটকে ময়শ্চারাইজ করতে সাহায্য করবে কারণ এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি।
ঠোঁট গোলাপি করার ঘরোয়া উপায়
প্রতিদিনের ধুলোবালি বা ময়লা থেকে ঠোট ধীরে ধীরে কালচে হতে শুরু করে। আবার কেউ কেউ রোজ বাইরে যাবার সময় লিপস্টিক বা অন্য কোন লিপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। যা সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে পরিষ্কার না করার কারণে ধীরে ধীরে ঠোঁট কালো হতে থাকে।
তাছাড়া লিপস্টিকে থাকা রাসায়নিক কিছু উপাদান ঠোঁটকে কালো করে থাকে। তাই ঘরোয়া কিছু উপায় রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে ঠোঁট গোলাপি করা সম্ভব।
* একটু কটন বলে সামান্য পরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ভিজিয়ে ঠোটোর কালচে জায়গায় ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে তারপরে কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করে আলতো ভাবে মেসেজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি দিনে দুই থেকে তিনবার করা যেতে পারে।
এটি ঠোঁটে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ঠোটের কালচে ভাব দূর করে ঠোঁটকে গোলাপি করে থাকে। আপেল সিডার ভিনেগার ঠোঁটের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
* এক থেকে দুই ফোঁটা মধুর মধ্যে দুই তিন ফোটা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে পুরো ঠোঁটে লাগিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি দশ মিনিট ঠোটে রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি দিনে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করা যাবে। লেবুর রস ঠোটে ব্লিচ বা এক্সফলিওট হিসেবে কাজ করে।
ঠোঁটে কোন সংক্রমণ থাকলে লেবু এন্টিসেপটিক হিসেবেও কাজ করে। মধু ঠোঁটে রুক্ষতা কমিয়ে ঠোঁটকে মসৃণ ও কোমল করতে সাহায্য করে।
* এক টুকরো বিট রুট কেটে কয়েক মিনিট ফ্রিজে রেখে তা বের করে ঠোঁটে আলতো ভাবে মেসেজ করতে হবে। বিট রুটের রস পাঁচ মিনিট ঠোঁটে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এটি নিয়মিত ঠোঁটে ব্যবহার করলে ঠোঁট গোলাপি হবে। ঠোটের কালো ভাব দূর করতে বিট রুট বেশ উপকারী। এটি ঠোঁটের মরা চামড়া উঠিয়ে ঠোঁটকে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url