পড়ায় মন বসে না কেন? জানতে পোস্টটি পড়ুন
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে পড়ায় মন বসে না কেন? পড়াশোনায় মনোযোগ আনার উপায়, পড়ায় মন বসানোর উপায়, মনোযোগ বৃদ্ধি দোয়া এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
যারা পড়াশোনায় অমনোযোগী তারা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকলে মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জানতে পারবে। তাই যারা এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদেরকে আজকেরে আর্টিকেলের স্বাগতম জানাই।
ভূমিকাঃপড়ায় মন বসে না কেন?
প্রিয় বন্ধুগণ লেখাপড়া প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। যে যত শিক্ষিত এবং যে যত জ্ঞান লাভ বা জ্ঞান অর্জন করতে পারে সে তত বেশি সমাজে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রাধান্য পেয়ে থাকে।
অনেকেই পড়াশোনায় অমনোযোগীতার কারণে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারে না যার কারণে তাদের ভবিষ্যতে নানান সমস্যা ফেস করতে হয়।
যারা পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে চান অথচ মনোযোগ আনতে পারেন না তারা এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকলে, এই সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন।
পড়ায় মন বসে না কেন? জানতে পোস্টটি পড়ুন
আমাদের অনেক সময় অনেক পড়া জমা হয়ে থাকে তারপরে সমস্ত পড়া শেষ করার জন্য পড়তে বসি তখন কিছুক্ষণ পড়ার পরে আর মনোযোগ থাকে না।
বিভিন্ন কাজের কথা চিন্তা আসে, তখন যদি মনে হয় ফেসবুকে একটু ঢুকে দেখি, আর ফেসবুকে ঢুকলে বুঝতেই তো পারছেন, সময় কিভাবে চলে যাবে সেটা বোঝার উপায় নাই।
এভাবে অনেকটা সময় চলে যায় আর অনেক পড়া যে জমা হয়ে আছে, সেটা জমাই থেকে যায়। পড়াশোনায় মনোযোগ বসাতে না পারি, আর পরীক্ষার সময় পরীক্ষার ফলাফল যদি খারাপ হয় তখন মন খারাপ করি। হতাশ হয়ে পড়াশোনায় অনেকে বন্ধ করে দেয়।
লক্ষ্য সেট করুনঃ পড়াশোনায় মনোযোগ আনার জন্য প্রথমে লক্ষ্য সেট করতে হবে বা নির্ধারণ করতে হবে। কেন আমাকে পড়াশোনা করতে হবে বা কেন আমার পড়াশোনা করা প্রয়োজন।
পড়াশোনা করলে আমার কি হবে আর পড়াশোনা না করলে আমার কি কি সমস্যা তৈরি হবে সে সম্পর্কে নোট করতে হবে।
যখন আপনি বুঝতে পারবেন কেন আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি করতে হবে তখনই আপনি পড়াশোনায় মনোযোগ আনতে পারবেন।
স্থান নির্বাচনঃ পড়াশোনায় মনোযোগ আনার জন্য পড়াশোনা কোথায় করবেন সেই বিষয়ে স্থান নির্বাচন করা খুব জরুরী। অর্থাৎ আপনি টেবিল চেয়ারে পড়বেন না ফ্লোরে বসে পড়বেন না বিছানায় পড়বেন এই বিষয়টা আপনাকে নির্বাচন করতে হবে।
তাতে যদি ফ্লোরে বা টেবিল চেয়ারে বসে পড়াশোনা করেন তাহলে পড়াশোনায় মনোযোগ থাকবে। আর যদি বিছানায় পড়াশোনা করেন তাহলে কিছুক্ষণ পর পরে আপনার শুয়ে পড়তে ইচ্ছা হবে এবং আপনি ঘুমিয়ে যাবেন।
কারণ বিছানার সাথে ঘুমের একটা খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে তাই মনোযোগ বৃদ্ধি করতে আপনাকে অবশ্যই স্থান নির্বাচন সঠিক করে নিতে হবে।
স্মার্ট স্টাডিঃ পড়াশোনা করার সময় একটানা বেশিক্ষণ মানে ঘন্টার পর ঘন্টা টানা পড়াশোনা করলে পড়ায় কোন মনোযোগ। ৩০ মিনিট পরপর একটু পড়ার ধরন চেঞ্জ করতে পারেন বা তিরিশ মিনিট পড়লেন পরবর্তী কিছু সময় সে বিষয়টার উপরে লিখলেন একটু বসে বসে চিন্তা করলেন।
তাহলে আপনার ব্রেন আপনার পড়াটাকে মনে রাখতে খুব ভালো সাহায্য করবে। পড়া শেষ করার পরে আপনি যদি কাউকে সে বিষয়ে বোঝাতে পারেন বা শোনাতে পারেন তাহলে সেটা অনেক বেশি ইফেকটিভ।
পড়াশোনার সময় গেজেট গুলো দূরে রাখুনঃ আপনি যখন পড়তে বসবেন তখন অবশ্যই আপনার পড়ার টেবিলের আশেপাশে কোন ধরনের ইলেকট্রিক ডিভাইস বা গ্যাজেট থাকা যাবে না ধরেন আপনার পাশে টিভি রয়েছে আপনার পাশে মোবাইল রয়েছে বা আদার্স অনেক কিছু হতে পারে।
আপনি পড়ার সময় আপনার পাশে যদি মোবাইল থাকে তাহলে কিছুক্ষণ পর আপনার মোবাইল দেখতে ইচ্ছা করবে। কেউ মেসেজ করেছে কিনা সেটা চেক করতে ইচ্ছা করবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকলে আপনার সময় কিভাবে দিয়ে চলে যাবে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না তাই পড়ার সময় গেজেট গুলো দূরে রাখুন।
আত্মবিশ্বাসী হন এবং স্ট্রেস পরিহার করুনঃ আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন তাহলে পড়াশোনার মনোযোগ রাখার ক্ষেত্রে কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। আত্মবিশ্বাসীরা সব সময় এগিয়ে থাকে লেখাপড়ার জীবনে পেশাগত জীবনে সব ক্ষেত্রে তারা কখনো পিছিয়ে থাকে না।
আপনার মধ্যে কোন রকম স্ট্রেস থাকলে কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা থাকলে তা ইতিবাচক চিন্তা করে নিজের মন থেকে স্ট্রেস কমিয়ে নিতে হবে তাহলে পড়াশোনায় দারুণ মনোযোগ আসবে।
প্রোপার ডায়েট এবং ঘুমানোর অভ্যাসঃ আপনার ব্রেন কে আপনি যদি সজীব এবং সতেজ রাখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রোপার্টমেন্ট করতে হবে।
অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে সবুজ শাকসবজি ফলমূল ডিম দুধ এ সমস্ত খাবার ব্রণের ফলে আপনার ব্রেনের স্ট্রেস নেয়ার ক্ষমতা অনেক বাড়বে।
এরপরেও ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় একজন মানুষ যদি প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘন্টা না ঘুমায় তাহলে তার ব্রেন কয়েকদিনের ভিতর অকেজো হয়ে পড়বে, তখন পড়াশোনা মনোযোগ রাখতে পারবেনা, মনে রাখতে পারবে না, কোনো ভালো কাজ তার দ্বারা সম্ভব নয়।
তাই আপনি যদি ভালো করতে চান তাহলে আপনাকে প্রোপার ডায়েটের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
পড়ায় মন বসানোর উপায়-জেনে নেওয়া যাক
প্রিয় বন্ধুরা বিভিন্ন কারনে আমাদের পড়াশোনায় মন বসে না যে সমস্ত কারণে বা যে সমস্ত চিন্তা করলে পড়াশোনায় মন বসে না ঐ সমস্ত বিষয়ে আমাদের ভেতর থেকে এভয়েড করা সব থেকে ভালো।
পড়াশোনায় মন বসানোর কিছু টিপস নিচে শেয়ার করছি আপনাদের সাথে সেগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
- আপনি যা পড়েছেন তা অন্যকে শেখানোর চেষ্টা করুন
- পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে
- পড়ার সময় অবশ্যই আপনাকে সঠিক সময়ে নির্বাচন করতে হবে
- কোন জায়গায় পড়বেন, বিছানায় না পড়ে টেবিল চেয়ারে বসে পড়াটা উত্তম
- পড়ার পাশাপাশি যা পড়েছেন তা লিখার চেষ্টা করুন
- বেশি বেশি পড়া এবং অনুশীলন করতে থাকুন
- কেন আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে তার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
- আপনার পড়াগুলো আপনি মার্কার পেন দিয়ে দাগিয়ে রাখতে পারেন
- পড়ার প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে হবে
মনোযোগ বৃদ্ধির দোয়া এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামের উপায়-জেনে নিন
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য আপনি দোয়া করতে পারেন যাতে আপনার পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং সমস্ত বাজে চিন্তাভাবনা আপনার মন থেকে দূর হয়ে যায়। আপনি এই দোয়াটি পড়তে পারেন- ইয়া হাকিমু। এই দোয়াটি আপনি পড়া শুরু করার আগে 11 বার কমপক্ষে বারবার পড়বেন।
তাহলে ইনশাল্লাহ আপনার পড়ার মধ্যে মনোযোগ আসবে আর সমস্ত বাজে চিন্তা ভাবনা গুলো দূর হয়ে যাবে। যাদের পড়া মনে থাকে না তারা বেশি বেশি এই দোয়াটি পাঠ করলে করা ইনশাল্লাহ মনে থাকবে এবং পড়ায় মন বসবে।
আরো পড়ুনঃ টেনশন দূর করার কিছু উপায়
উপরে উল্লেখিত যে সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সে সমস্ত বিষয়গুলোর পাশাপাশি আপনি যদি এই দোয়াটি পাঠ করেন তাহলে অবশ্যই মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য বা মনোযোগী হওয়ার জন্য খুব ভালো কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।
দোয়াটি হলঃ রব্বিস রহলি সদরি ওয়া ইয়াস সিরলি আমরি ওয়াহলুল উকৃদাতাম মিল লিসানি ইয়াফকৃাহু কৃ্াউলি।
পরিশেষ
প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা যারা আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তারা আশা করি পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার বিভিন্ন ধরনের টিপস এবং ট্রিকস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবং আপনারা উপকৃত হয়েছেন।
এ ধরনের আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সে পর্যন্ত আমাদের পাশেই থাকুন। সবশেষে আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url