এলার্জি দূর করার উপায় এবং রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়-শতভাগ কার্যকর
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে এলার্জি দূর করার উপায়, মুখে এলার্জি ও হঠাৎ এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।
উক্ত বিষয় সম্পর্কে যারা জানতে ইচ্ছুক, তাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলে স্বাগতম। তাই মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
ভূমিকা
প্রিয় বন্ধুগণ আমরা অনেকেই এলার্জির সমস্যায় ভুগে থাকি। খুবই বিরক্তিকর একটি সমস্যা যা আমাদের মাঝেমধ্যে হতে দেখা যায়, বিভিন্ন কারণে এটা হয়ে থাকে।
তবে অনেকেই সমস্যা সমাধানের উপায় জানেনা, যার কারণে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকে। এই সমস্যার সমাধানের উপায় জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
এলার্জি দূর করার উপায়-সম্পর্কে জেনে নিন শতভাগ কার্যকর
বন্ধুগণ আমাদের এলার্জি হওয়ার পিছনে নানান ধরনের কারণ রয়েছে সেসব কারণের মধ্যে অন্যতম- আমরা অস্বাস্থ্যকর অপরিষ্কার অনেক খাবার গ্রহণ করে থাকি। তারপরে বাতাসে ভেসে বেড়ানো অনেক ধরনের জীবাণু থাকে যা আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে, সব সময় আমরা কিন্তু অসুস্থ হই না।
কারন আমাদের শরীরের মধ্যে জীবাণু যাতে না ঢুকতে পারে তার জন্য অনেক পাহারাদার থাকে যারা জীবাণু ঢুকতে বাধা প্রদান করে। ক্ষতিকর জীবাণুগুলোকে পাকড়াও করে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে থাকে। এতে করে আমাদের শরীরের রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করে থাকে।
তবে এভাবে সব সময় কাজ করবে ব্যাপারটা এমনটা নয় তখনই দেখা যায় এলার্জি। সাধারণত এটা ভয়ের তেমন কিছু নয় এটা এমনিতেই চলে যায়। এলার্জি চিকিৎসা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল এলার্জি আমাদের শরীরে যেন না হয় তার ব্যবস্থা নেওয়া।
অর্থাৎ যে সমস্ত খাবার খেলে আপনার এলার্জি হচ্ছে ঐ সমস্ত খাবার আপনাকে বাদ দিতে হবে, আপনাকে বুঝতে হবে কোন খাবার গুলো খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ পরেই এলার্জি হচ্ছে বা চুলকানি হচ্ছে, তখনই বিষয়টা নির্ধারণ করে ওই ধরনের খাবার গ্রহণ করা আপনার জন্য উচিত হবে না।
বা যে সমস্ত জিনিসের সংস্পর্শে আসলে তার কিছুক্ষণ পরে এলার্জি হচ্ছে সে সমস্ত জিনিসের সংস্পর্শেও আপনাকে যাওয়া যাবে না।
এলার্জি চুলকানি দূর করার উপায়-সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
অনেক সময় আমরা খুব আরাম করে পছন্দের খাবার খেয়ে থাকি। খাবার খাওয়ার পরে বা কিছুক্ষণ পরে দেখা গেল আমাদের শরীরে লালচে ভাব, তার মানে শরীরে এলার্জি হয়েছে এবং প্রচুর চুলকানি হচ্ছে।
যে জিনিসগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার অ্যালার্জি দেখা দেয় সেই জিনিসগুলো আপনার সংস্পর্শে আপনি আসতে দেবেন না। এটা হলো এলার্জি দূর করার প্রথম উপায়। তার মানে আপনাকে প্রথমে আইডেন্টিফাই করতে হবে যে কিসে আপনার এলার্জিটা হয়।
এক্ষেত্রে আপনাকে একটু গোয়েন্দাগিরি করতে হবে আপনি যদি আইডেন্টিফাই করতে পারেন যে এগুলোর কারণে আমার এলার্জি হয় বা চুলকানি হয় তখন আপনি সে সমস্ত জিনিসগুলো থেকে নিজেকে এভোয়েড করুন আপনি দেখবেন যে আপনার এলার্জি আর হবেনা।
সাধারণত খাবারের কারণে যে সমস্ত এলার্জিগুলো হয়ে থাকে এগুলো সাধারণত আইডেন্টিফাই করা যায় কিন্তু খাবার ছাড়াও অন্যান্য যে কারণগুলো রয়েছে সেটা আইডেন্টিফাই করা খুবই ডিফিকাল্ট।
তো আপনার যদি আইডেন্টিফাই করতে অসুবিধা হয় তাহলে আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে পারেন।
মুখে এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং এলার্জি কমানোর উপায়-জেনে নিন
আমাদের অনেক সময় মুখেও এলার্জি হয়ে থাকে যা আমাদের খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। এখন আপনার যদি মুখে এলার্জি হয়ে থাকে বা চুলকানি হতে থাকে তাহলে আপনি নারিকেল তেল আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন এতে উপকার পাবেন।
কর্পূর এবং নারিকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে এলার্জির জায়গায় লাগিয়ে দিন তাহলে দেখবেন আপনি কিছুক্ষনের মধ্যে আরাম পাচ্ছেন। অনেক সময় আমাদের মুখের ত্বক নোংরা বা অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন কাপড় এর স্পর্শেও অ্যালার্জি চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে।
আপনি মুখের ত্বক পরিষ্কার করছেন যে সমস্ত টাওয়াল দিয়ে তা পরিষ্কার থাকা অত্যন্ত জরুরি আবার রাতে ঘুমানোর সময় বিছানা চাদর বা বালিশের কাভার এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী।
কারণ এই সমস্ত জিনিসগুলো আপনার মুখের ত্বকের সংস্পর্শে আসে, যদি এগুলো অপরিষ্কার হয়ে থাকে তাহলে মুখে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এলার্জি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চাইলে আপনার বিছানার চাদর, বালিশের কাভার, লেপের কাভার, কাঁথা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন যাতে এলার্জি সমস্যা থেকে আপনি বাঁচতে পারেন।
আবার অনেক জিনিস রয়েছে যেগুলো ধোয়া যায় না সপ্তাহে বা মাসে যেমন কার্পেট রয়েছে সেগুলো বাসাতে ব্যবহার কম করাই ভালো। বিছানা গোছানোর সময় বা ঝাড়ার সময় মুখে মাস্ক পড়ে নেওয়া উচিত তা না হলে এলার্জি হয় যে সমস্ত জীবনে সংস্পর্শে তা আপনার শরীরের প্রবেশ করবে।
আর যে সমস্ত জিনিসগুলো ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলা যায় ঐ সমস্ত আসবাবপত্র বা ঐ সমস্ত জিনিসগুলো ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিবেন যাতে ধুলাবালি বেশি না ছড়ায়।
হঠাৎ এলার্জি দূর করার উপায়-জেনে নিন দারুন কার্যকর
প্রিয় পাঠক আমাদের দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার কারণে বাইরে থাকতে হয় বিভিন্ন পরিস্থিতি পরিবেশের মধ্যে থাকতে হয়, ধুলাবালির মধ্যে থাকতে হয় এসব কারণে আবার বিভিন্ন খাবার গ্রহণের কারণে এলার্জি বা চুলকানি হয়ে থাকে।
এরপরে আমাদের ত্বকে লালচে ভাব দেখা দেয় এবং চামড়ার আক্রান্ত স্থানে ফুলে যায়। যার ফলে প্রকট আকারে দেখা দেয় চুলকানির সমস্যা। এখন হঠাৎ এলার্জি দেখা দিলে দূর করতে চাইলে কি করবেন, সে ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে বাসায় যদি নারিকেল তেল থাকে তাহলে আপনার আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিতে পারেন।
কিছুটা আরাম পাবেন আর পরবর্তীতে পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় চুলকানি যদি প্রচুর বেড়ে যায় এলার্জির কারণে তাহলে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। পাশাপাশি চেষ্টা করবেন আপনার যে সমস্ত কারণে এলার্জি দেখা দিচ্ছে সেগুলোকে এভয়েড করা।
রক্তের এলার্জি দূর করার উপায়- সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
রক্তের এলার্জি দূর করার জন্য আমাদের ঘরে যে গুড়া দারচিনি পাওয়া যায় সেটা দিয়ে খুব সহজেই এর থেকে সমাধান পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রথমে আধা চা চামচ পরিমাণ গুড়া দারচিনি এক গ্লাস পানির সাথে খুব ভালো করে গরম করে নিতে হবে, সাধারণত আমরা যেভাবে ঘরে চা বানিয়ে থাকি।
তারপরে ঘরে যদি গুড় থাকে তাহলে এর সঙ্গে গুড় মিশিয়ে নিতে পারেন আর গুড় না থাকলেও কোন সমস্যা নেই। এভাবে আধা কাপ বা এক কাপ করে প্রতিদিন যদি আমরা খেতে পারি তাহলে রক্তের মধ্যে এলার্জি তৈরি হওয়ার যে উপাদানটি থাকে সেটা আস্তে আস্তে কমে যাবে।
বাচ্চাদের অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়-দারুন কার্যকর
অনেক সময় বাচ্চারা জন্মের পরপরই শিশুদের শরীরে লাল লাল বিভিন্ন ধরনের দাগ দেখা যায়। এগুলো অনেক সময় এমনিতে ভালো হয়ে যায় দেড় দুই মাসের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে ভালো হয়ে যায়। একটু বড় হলে ও বাচ্চাদের এলার্জি হলে বড় ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।
অনেক সময় বিভিন্ন খাবার গ্রহণের ফলেও এলার্জি বাচ্চাদের দেখা যায়। বাচ্চাদের ত্বক অনেক সেনসিটিভ, ত্বকে লালচে ভাব দেখা যায়। এটা এলার্জি হতে পারে।
এলার্জির মূল লক্ষ হচ্ছে এলার্জি হয় এমন খাবার খাওয়ালে এলার্জি হতে পারে এবং এলার্জি জাতীয় কোন জিনিস ত্বকের সংস্পর্শে এলে তখনও এলার্জি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ প্রিয় মানুষের রাগ ভাঙ্গানোর নিনজা টেকনিক
এলার্জির সাথে হাঁচি হতে পারে কাশি হতে পারে হঠাৎ করে পেট ব্যাথা হয়ে পাতলা পায়খানা হতে পারে। শ্বাসকষ্ট হতে পারে তখন আপনাকে বুঝতে হবে যে সমস্ত খাবার খেলে এলার্জি হচ্ছে সে সমস্ত খাবার গুলো খাওয়ানো যাবে না। গরুর দুধ সেক্ষেত্রে খাওয়ানো যাবে না কারণ গরুর দুধের মধ্যে প্রচুর এলার্জি রয়েছে।
আমরা অনেক সময় ত্বকের মধ্যে লোশন, পাউডার ব্যবহার করে থাকে এগুলো ত্বকের কোষগুলো বন্ধ করে দেয়। তখন এই ত্বকের মধ্যে নানান ধরনের ইনফেকশন দেখা দিতে পারে, এলার্জি হতে পারে এবং শিশুর ত্বকে কখনো সরিষার তেল ব্যবহার করবেন না কারণ সরিষার তেল অনেক বেশি সেনসিটিভ যার ফলে এলার্জি হতে পারে।
তেল ব্যবহার করলে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন তবে শীতের সময় ব্যবহার করবেন গরমের সময় ব্যবহার করার দরকার নেই। অর্থাৎ যে সমস্ত খাবার খেলে এবং যে সমস্ত জিনিস ত্বকের ব্যবহারের ফলে এলার্জি দেখা দেয় সে সমস্ত জিনিস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
পরিশেষে
প্রিয় বন্ধু আপনারা যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এলার্জি সমস্যার সমাধানের উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন পাশাপাশি উপকৃত হয়েছেন।
এ ধরনের আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। সবশেষ আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url