জেনে নিন মাশরুম দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির নিয়ম ও বিভিন্ন উপায়-২০২৪ | Rahul IT BD

জেনে নিন মাশরুম দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির নিয়ম ও বিভিন্ন উপায়-২০২৪

প্রিয় পাঠক আজকে আমি আপনাদেরকে মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা ও মাশরুম দিয়ে কি কি খাবার তৈরি করা যায় তার নিয়ম এবং বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি। আপনাদের এই বিষয়ে ধারণা কম থাকলে আজকের আর্টিকেলটি পড়লে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন।
মাশরুম দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির নিয়ম ও বিভিন্ন উপায়
তাই মাশরুমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে যারা আগ্রহী তাদের প্রত্যেকের আর্টিকেলে স্বাগতম।

ভূমিকা

মাশরুম এক প্রকার ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। একটু দেখতে অনেকটা ব্যাঙের ছাতার মত। এটা জন্মায় অনেকটা স্যাতস্যাতে জায়গায় যেখানে সূর্যের আলো সাধারণত পড়ে না। সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৪ হাজার প্রজাতির মাশরুম রয়েছে। 

তবে সকল প্রকার মাশরুম খাওয়ার উপযুক্ত নয় কিছু কিছু মাশরুম আছে খুবই বিষাক্ত। আমাদের দেশেও এখন মাশরুমের চাষ হচ্ছে সেগুলো প্যাকেটজাত করে বাজারে অ্যাভেলেবল পাওয়া যায়।

জেনে নিন মাশরুম দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির নিয়ম ও বিভিন্ন উপায়

মাশরুম সাধারণত আমরা তিন ভাবে খেতে পারি প্রথমত তাজা অবস্থায় দ্বিতীয় তো শুকনা অবস্থায় তৃতীয়ত পাউডার করে।

তাজা মাশরুমঃ প্রথমে ভালো করে ধরে নিতে হবে পরে চিকন চিকন করে কেটে নিতে হবে। এটা আমরা সবজির মতো করে খেতে পারি। আমরা এর ভর্তা খেতে পারি, মাছের মধ্যে বা মাংসের মধ্যে দিয়ে খেতে পারি। আমরা মাছ-মাক্সের ভেতরে যেভাবে আলু দিয়ে ঠিক সেভাবে মাশরুম ব্যবহার করতে পারি। 


মাংসের মধ্যে মাশরুম দিলে মাংসের যে অতিরিক্ত চর্বি থাকে তা কেটে যায়। এটা আমরা বেগুনের চপ যেভাবে খায় সেভাবে বেগুনির মত করে খেতে পারি। কাবাব করে খেতে পারি।

শুকনো মাশরুমঃ সাধারণত তাজা মাশরুম কে অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার জন্য রোদে ভালো করে শুকিয়ে শুকনো মাশরুমকে কোন বয়ানের ভেতরে রাখতে হবে এবং তার মুখ ভালো করে আটকে দিতে হবে তাহলে কয়েক মাস সেটা সংরক্ষণ করা সম্ভব। 

এখন শুকনো মাসরুম যেভাবে খেতে হবে প্রথমে শুকনো মাসরুমকে গরম পানির ভেতরে দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে তারপর যখন নরম হবে তখন তাজা মাশরুম যেভাবে করে রান্না করা হয় ঠিক সেভাবে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। তাজা মাশরুমের মত শুকনা মাশরুম সবকিছুতে ভালো লাগবে না। 

যেমন ভর্তা তাজা মাশরুমের সব থেকে ভালো লাগে শুকনো মাশরুমের ক্ষেত্রে ততটা টেস্টি হয় না। শুকনো মাশরুমের সবচাইতে ভালো রেসিপি হল আমরা অনেকে টিকিয়া কাবাব খায় সেটা যদি শুকনো মাশরুম দিয়ে করা যায় তাহলে সেটা অনেক সুস্বাদু লাগে। 

সাধারণত কাবাব বানায় আমরা ভোটের ডাল এবং গরুর মাংস এখানে গরুর মাংসের বদলে পুরোটাই শুকন মাশরুম ব্যবহার করতে হবে।

পাউডার মাশরুমঃ তরকারিতে হলুদ মরিচের গোড়া যেভাবে ব্যবহার করা হয় ঠিক তেমনভাবেই মাশরুম পাউডারটা আমরা ব্যবহার করতে পারি। সকালে নাস্তাতে রুটির আটার সাথে এই পাউডারটা মিশে খাওয়া যেতে পারে। 

তবে পরিমাণে কম দিতে হবে বেশি পরিমাণ দিলে তিতা তিতা ভাব লাগবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য মাশরুমের পাউডার টা খুবই ভালো।

মাশরুম কি ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য ভাল? কিভাবে মাশরুম খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মাশরুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ১০০ গ্রাম মাশরুমের প্রায় ৯৩ গ্রাম হলো জল। অবশিষ্ট তিন গ্রাম প্রোটিন আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। ব্যাকগ্রাউন্ড ফাইবার থাকে যা আপনার ব্লাড সুগার স্পাইকে বাধা দেবে। 

মাশরুমে গ্লাইসনিক ইনডেক্স খুবই কম। মাশরুম খেলে আপনার প্রাথমিক ব্লাড সুগার লেভেল বাড়বে না এবং ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে থাকবে। মাশরুমে ভিটামিন সি থাকে ২ মিলিগ্রাম আর এন্টিঅক্সিডেন্ট যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। যা আপনার ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করবে। 


গবেষণায় দেখা গেছে মাশরুম আপনার ইনসুলিন রেসিস্টেন্স কমিয়ে অগ্নাশয় সুস্থ রাখে। ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস সুস্থ থাকবে। তাই মাশরুম আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সাপোর্ট করবে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মাশরুম অসাধারণ একটি খাবার। মাশরুম পাউডার দু-চার কফি ইত্যাদির সাথে মিক্সচার করেও খেতে পারেন।

আসুন জেনে নিই মাশরুমের উপকারীতা ও পুষ্টিগুন সম্পর্কে

আমরা সচরাচর যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি তার চাইতে মাশরুমের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি বলা হয়। আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মাশরুম মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, প্রাকৃতিকভাবে মাশরুমে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট মিনারেলস বিদ্যমান। 

মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং মিনারেলের প্রধান কাজ। স্ট্রোক এবং ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে। মাশরুমে সোডিয়াম এর মাত্রা খুবই কম থাকে উচ্চমাত্রায়ের আঁশ এবং পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি থাকায় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। 

প্রোটিন ফাইবার এবং মিনারেল এ ভর্তি মাশরুম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই কার্যকারী ভূমিকা রাখে। মাশরুমে প্রাকৃতিক ইনসুলিন থাকে যা চিনি কে ভাঙতে পারে এবং ওজন কমিয়ে বেশি বহল শরীর তৈরি করতে সাহায্য করে মাশরুম।

তাই এটি রক্তের চিনির পরিমাণ যেমন নিয়ন্ত্রণ করে তেমনি ওজন কমাতেও সমানভাবে সাহায্য করে। মাশরুমে যে ফাইবার থাকে তা আমাদের রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত মাশরুম খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় মাশরুম আমাদের হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। 

হাড়ের ব্যথা কমাতে এবং হাড়ের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে মাশরুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাশরুম ত্বকের জন্য খুবই ভালো মাশরুমে যেহেতু 90 ভাগ প্রায় জলদি থাকে তাই ত্বককে নরম এবং কমল রাখতে সাহায্য করে। 

সবজিতে ভিটামিন ডি পাওয়া খুবই দুষ্কর কিন্তু মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে তাই আমরা এটাকে সবজির মতো করেও খেতে পারি এবং ভিটামিন ডির ঘাটতি পূরণ করতে পারি। মাশরুমে থাকা ফাইবার এবং এনজাইম আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। 

আমাদের দেশের মানুষ মাশরুমের পুষ্টিকরণ সম্পর্কে যদি খুব বেশি জানত তাহলে এর খাওয়ার চাহিদা অনেক বেড়ে যেত। তবে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মাশরুমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকে জানতে পেরেছে যার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে ইদানিং মাশরুমে চাষ দেখা যাচ্ছে। 

মাশরুমে থাকে উচ্চ মাত্রার আমিষ মাংস মাছ ডিমের যেমন আবেশ থাকে এর বিকল্প হিসাবে মানুষ মাশরুম খেতে পারে।

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে মাশরুম খান - জেনে নিন মাশরুম এর উপকারিতা

মাশরুম এমন একটা উদ্ভিদ যেটাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। বিশেষ করে যারা যৌন সমস্যা তে ভুগছেন অনেকদিন থেকে অথবা যাদের বীর্য খুবই পাতলা মাশরুম তাদের জন্য এক্ষেত্রে একটি সুসংবাদ হতে পারে। মাশরুমে সেলিনিয়াম জাতীয় এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে। 

যে তরল পদার্থ পুরুষ বা মহিলা যৌন জীবনকে উন্নত করে। বিশেষ করে পুরুষের পাতলা বীর্য বা তরল বীর্যকে ঘন করতে সহায়তা করে। যৌন উত্তেজনা বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের অনেকেরই আবার হাত-পা ব্যথা গিরায় গিরায় ব্যথা ভিটামিন ডি বা ক্যালসিয়ামের অভাবে ভুগতেছেন তারা মাশরুম খেতে পারেন। 

এতে করে আপনাদের ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে এবং ভিটামিন ডির অভাব দূর করবে। এক্ষেত্রে আমাদের ওষুধ না খেয়েও মাশরুম খেয়ে এ ধরনের ঘাটতি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

পাশাপাশি রক্তে অনেক কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকলে সেটা কমাতে সাহায্য করে বিশেষ করে খারাপ খরচেবল কমাতে সাহায্য করে অপরদিকে ভালো কোলেস্টেরল রথে বাড়াতে সাহায্য করে।

পরিশেষে

প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা যারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন আমি আশা করি মাশরুমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করার নিয়ম এবং বিভিন্ন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন পাশাপাশি উপকৃত হয়েছেন। 

আপনারা এ ধরনের আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে থাকুন। সবশেষে আপনাদের পরিবারের ও সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। (ধন্যবাদ)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url