কালোজিরার উপকারিতা ও গুনাগুন। কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম জানুন | Rahul IT BD

কালোজিরার উপকারিতা ও গুনাগুন। কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম জানুন

প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই কালোজিরার উপকারিতা ও গুনাগুন এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইন্টারনেটের সার্চ করে থাকেন। আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে কালোজিরার বিভিন্ন পুষ্টিগুণ নিয়ে খুবই কার্যকর কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
কালোজিরার উপকারিতা ও গুনাগুন
আপনি যদি এর গুনাগুন নিয়ে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলে আপনাকে স্বাগতম।

ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুগণ আল্লাহ তাআলা মৃত্যু ছাড়া এই কালোজিরার মধ্যে সকল রোগের প্রতিষেধক রেখেছেন। অর্থাৎ কালোজিরা যদি কেউ খান সেটা সরাসরি হতে পারে, তেল তৈরি করে হতে পারে অথবা ভর্তা বানিয়ে খাওয়া হতে পারে, যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন আল্লাহ তায়ালা এর ফলে সকল রোগ থেকে আরোগ্য লাভের তৌফিক নসিব করে। 

এরমধ্যে সর্ব রোগের ওষুধ রয়েছে নিয়মিত এটি খাওয়া উচিত।

কালোজিরার উপকারিতা ও গুনাগুন। কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম জানুন

কালোজিরা এত উপকার যে বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে। গবেষণায় দেখা যায় যে এই কালোজিরাতে ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি রয়েছে। শুধুমাত্র পুষ্টিগুণে নয় মসলা হিসেবেও কালোজিরা চাহিদা অনেক। 

কালোজিরা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, উচ্চ রক্তচাপ কমায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে, এছাড়াও অনেক উপকারিতা রয়েছে। যার কারনে কালোজিরা কে সর্ব রোগের ওষুধ বলা হয়। তবে এসব উপকারিতা পেতে হলে আপনাকে মেনে চলতে হবে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম কানুন। 


তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা এবং এর সঠিক নিয়ম। যা আপনার অনেক সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। এসব কিছু জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরা আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে কার্যকর করতে উজ্জীবিত করে। বিশেষ করে সে সমস্ত অঙ্গগুলো যে আপনার স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রতিদিন পুদিনা পাতার রস, দু চা চামচ মধু, এক চা চামচ কালোজিরা মিশিয়ে খেতে পারেন। 

এটি আপনার মেধা বাড়াতে সাহায্য করবে এছাড়াও এটি মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মরণশক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে কালোজিরা বেশ কার্যকর। বেশ কিছু চিকিৎসক ডায়াবেটিসের মাত্রা কমানোর জন্য কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কারণ কালোজিরা হাই ব্লাড সুগার এবং ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

আপনি যদি ডায়াবেটিসের ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে কালোজিরা খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ করেঃ একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে বিশ্বে ১০ জন পুরুষের মধ্যে কমপক্ষে দুজন পুরুষ বন্ধ্যাত্ব জনিত সমস্যায় ভুগে। এই সমস্যার সমাধানে কালোজিরা দারুন ভাবে সহায়তা করতে পারে। 

কালোজিরার তেল প্রতিদিন এক চামচ খাওয়ার পর কোনরকম বিরূপ প্রভাব ছাড়াই বীর্যের মান উন্নত হয়। কালোজিরা শুক্রাণু বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি শুক্রাণুর গুণগতমান এবং গতিশীলতার উন্নতি করে। তাই পুরুষের বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে এটি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ কালোজিরা নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে কালোজিরা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে বেশ কার্যকর। এক্ষেত্রে কালোজিরা রসের থেকে কালোজিরা বীজের গুড়া বেশি কার্যকর। 

রাতে ঘুমানোর আগে ৫ থেকে ১০ গ্রাম কালোজিরার গুড়া দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এভাবে দুই মাস খেলে আপনি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

প্রদাহ কমায়ঃ কালোজিরার বীজে প্রদাহ কমানোর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিশ্বের বহু নামকরা চিকিৎসকরা মতামত দিয়েছেন যে কালোজিরা বীজের তেল বাত জনিত প্রদাহ কমাতে ব্যাপক কার্যকর ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা যায় নিয়ম অনুযায়ী খেলে এটি মস্তিষ্কের প্রদাহ কম করতে সাহায্য করে। 

তাই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে প্রতিদিন দু চামচ কালোজিরা তেল হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে। এতে শরীর ব্যথা কমায়, আপনার শরীরের যে কোন ব্যথা কমাতে কালোজিরা অনেক কার্যকরী। 

কালিজিরার তেল একটু গরম করে ব্যথার জায়গাতে মালিশ করে দিলে ব্যথা অনেকটা সেরে যাবে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের বাতের ব্যথায় ভালো উপকার পাওয়া যায়।

সর্দি কাশিতে কালোজিরাঃ সর্দি কাশি কমাতে এক চা চামচ কালিজিরা রস, তিন চা চামচ মধু, তুলসী পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার সেবন করুন। একই সাথে কালোজিরা শুকনো কোন কাপড়ে জড়িয়ে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিলে সর্দি ভালো হয়। আরো ভালো ফলাফল পেতে বুকে ও পিঠে কালোজিরা তেল মালিশ করুন।


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক শক্তিশালী করে কালোজিরা। নিয়মিত খেলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অনেক সজীব থাকে এবং যেকোনো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। স্বাভাবিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। 

তবে গর্ভাবস্থায় এবং দুই বছরের বাচ্চাদেরকে কালোজিরা তেল খাওয়ানো উচিত নয়। এছাড়া আপনি নিয়ম মেনে কালোজিরা খেলে অনেক উপকার পাবেন তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়।

ত্বক ভালো রাখতে কালোজিরাঃ মাত্র সাত দিন যদি প্রতিদিন কালোজিরা নিয়ম অনুযায়ী খেতে পারেন তাহলে আপনার ত্বককে এতটাই ভালো করে দেবে যে আপনার ত্বকের সমস্ত বলিরেখা দূর করে দেবে এবং আপনার মধ্যে বয়সের ছাপ চলে যেতে সহায়তা করবে। 

কারণ কালোজিরাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট এ কারণে কালোজিরা নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ সারাতে ভালোভাবে কাজ করে। এছাড়াও রয়েছে অ্যামিনো এসিড, ফাইবার, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এছাড়াও অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে।

সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন

প্রতিদিন সকালে এক চিমটি কালোজিরা এক গ্লাস পানির সাথে খেলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হবে। এছাড়াও কালোজিরা ভর্তা করে খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই সাধারণত ভাতের সাথে কালোজিরা ভর্তা খেতে পছন্দ করি। এভাবে খেলে আমাদের মুখে অনেক রুচি আসে। 

যেহেতু কালিজিরাতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে তাই যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস রয়েছে তারা কালিজিরা খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে কালিজিরা খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, স্কিন অনেক সুন্দর রাখে, যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে। মানে যে কোন রোগের বিপক্ষে ফাইট করতে আপনাকে সাহায্য করবে। 

এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বাড়িয়ে দেয়। আবার যে সমস্ত মায়েদের বুকের দুধ বাচ্চারা পায় না সে সমস্ত মায়েরা যদি সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলে তাহলে বাচ্চারা মায়ের বুকের দুধ খেতে পারবে। অবশ্য এ ব্যাপারে ডাক্তাররাও অনেক পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

কালিজিরা ওজন কমাতে কতটা কার্যকরী জেনে নিন

ওজন কমাতে অনেকেই লেবুর রস, মধু খেয়ে থাকেন এবার এই মিশ্রণের সাথে যদি একটু কালিজিরা রস মিশ্রিত করে খাওয়া যায় তাহলে আরো অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। দেখবেন এটি আপনার অতি দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করছে। এছাড়া কালোজিরাতে আছে বিশেষ ধরনের ফাইবার যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। 


আপনি খুব সহজেই আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবেন। কালোজিরা আপনি গুড়া করেও খেতে পারেন আবার এর সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেতে পারে। আবার এটা গরম পানির ভিতরে দিয়ে ফুটিয়ে চা বানিয়েও খেতে পারেন। 

সারাদিনে আনুমানিক পাঁচ থেকে সাত গ্রাম কালিজিরা আপনি খেতে পারেন। যেহেতু কালোজিরা সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে আর সুগার তো আমাদের শরীরের চর্বি বৃদ্ধি করে তাই ওজন কমাতে কালিজিরা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

পরিশেষে

প্রিয় বন্ধুগণ যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনার কোন কাজে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমি আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। 

এ ধরনের নিয়মিত আর্টিকেল সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে থাকুন। সবশেষে আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে অবশ্যই সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url