জুমার দিনের ১১ টি আমল এবং জুমার নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টটিতে জুমার নামাজের ফজিলত, জুমার দিনের ১১ টি আমল এবং জুমার দিনের ১৫ টি সুন্নত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যারা এ বিষয়ে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী আছেন, তাদের প্রত্যেককে জানাই সুস্বাগতম।
তাই জুমার দিনের এই গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো সম্পর্কে জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে এই পোস্টটি পড়তে থাকুন। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।
ভূমিকা
প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা অনেকেই জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ আমল ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে চেয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন। তাই আপনাদের এই দিক বিবেচনা করে আজকের এই আর্টিকেলে সেই বিষয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের চেষ্টা করেছি, কোরআন ও হাদিসের আলোকে। তাই পোস্টটি মন দিয়ে পড়তে থাকুন।
জুমার দিনের ১১ টি আমল-খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেভাবে করবেন
১- জুমার দিনে যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো জুমার নামাজ আদায় করা। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি পরপর তিনটা জুমার নামাজ আদায় করবে না।
অলসতা করে আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। এই অন্তরে আর হেদায়েত গ্রহণ করবে না।
২- তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা অন্যদিনের তুলনায় এবং জুমার নামাজেও সবচাইতে তাড়াতাড়ি আসা। এর অনেক ফজিলত রয়েছে। জুমার দিনে ভালো করে গোসল করলে, সকালে তাড়াতাড়ি উঠবেন।
জুমায় নামাজের জন্য তাড়াতাড়ি উপস্থিত হবেন, ইমামের খুব কাছাকাছি বসবেন, মনোযোগ সহকারে খুতবা শুনবেন এবং খুতবার সময় পাথরের মত চুপ থাকবেন।
সে ব্যক্তি বাসা থেকে মসজিদে আসা পর্যন্ত প্রতি কদমের জন্য আল্লাহ তাআলা এক বছর রোজা রাখা এবং রাত জেগে এক বছর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সোয়াব দেবে। কুরআনে যত ফজিলতের কথা রয়েছে, ক্যালকুলেশন করলে দেখা যায় এর চাইতে বেশি ফজিলত কোরআনে আর কোথাও নাই।
৩- আল্লাহর কাছে দোয়া করা জুমার দিন দোয়া কবুল করার একটা বিশেষ দিন। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন জুমার দিনে একটি বিশেষ সময় আছে, এই সময়ে বান্দা যদি আল্লাহর কাছে কিছু চায় তাহলে আল্লাহ বান্দার দোয়া সাথে সাথে কবুল করে নেন।
কিন্তু কোরআনে বা হাদিসে এই নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলা হয়নি। তবে বেশিরভাগ আলেমদের মতামত হলো সে সময়টি হল আসরের পরে।
৪- জুমার দিনে আরও একটি বিশেষ আমল হলো নবীর নামে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্য বেশি বেশি দরুদ পাঠ করলে আমরা বেশি বেশি উপকৃত হব এবং অনেক সওয়াব পাব বা আমরাই লাভবান হব।
তাই জুমার দিনে এই আমলটি বেশি বেশি করা উচিত। আল্লাহর নবীর জন্য যখন কেউ দরুদ পড়ে আল্লাহ তার উপর অনেক সন্তুষ্টি হয়।
৫- জুমার রাত অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত, অনেকেই এ রাতে রাত জেগে ইবাদত করেন কারণ বিশেষ ফজিলতের রাত জুমার রাত। একটি হাদিসে পরিষ্কারভাবে নির্দিষ্ট করে শুধু এই রাত জেগে ইবাদত করা নিষেধ আছে।
তেমনিভাবেএকইভাবে একটি হাদিসে শুধুমাত্র এই দিনে রোজা রাখা নিষেধ করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ আপনি সবসময় তাহাজ্জুদ পড়েন সে হিসাবে এটা পড়েন অনেক উত্তম কিন্তু নির্দিষ্ট করে আপনি সিয়ামের জন্য এই সময়টাকে নির্ধারণ করবেন না।
৬- সূরা কাহাফ জুমার দিনে যদি কেউ তেলাওয়াত করে কিয়ামতের দিন এটি তার জন্য নূর এর ভূমিকা রাখবে। জুমার দিনের আমলের মধ্যে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। এই সূরা পড়ার জন্য আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন।
৭- জুমার দিনের আরেকটি বিশেষ আমল হলো উত্তম গোসল করা। অর্থাৎ জুমার দিনে বিশেষ ভাবে গোসল করতে হবে।
৮- আরেকটি উত্তম আমল হল জুমার দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৯- যে ব্যক্তি জুমার দিনে পায়ে হেঁটে মসজিদে গেল, সে ব্যক্তির আমল বাহনে চড়ে আসা ব্যক্তির চাইতে উত্তম আমল হবে।
১০- আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো খুতবার সময় চুপ থাকা।
১১- জুমার দিনে আমরা যখন মসজিদের ভিতরে আসব তখন দুই রাকাত নামাজ না পড়ে মসজিদের ভেতর বসবো না। ঐ সময় ওয়াজও যদি চলে দুই রাকাত নামাজ না পড়ে আমরা বসবো না। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল।
জুমার দিনের শ্রেষ্ঠ আমল-সম্পর্কে জেনে নিন
জুমার দিনে যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো জুমার নামাজ আদায় করা।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি পরপর তিনটা জুমার নামাজ আদায় করবে না, অলসতা করে আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। এই অন্তরে আর হেদায়েত গ্রহণ করবে না।
জুমার নামাজের ফজিলত-জুমার দিনের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক
আল্লাহ বললেন, ও আমার মুমিন বান্দারা শোনো জুমার নামাজের আজান যখন দেওয়া হয়, আল্লাহর স্মরণে তোমরা ধাবিত হও। কেনাবেচা বন্ধ করে দাও, এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণ, যদি তোমরা এটা বুঝতে পারো। জুম্মার নামাজের আজান যখন দেওয়া হয়, আল্লাহর স্মরণে তোমরা বের হয়ে যাও।
বিশ্ব নবী বলেছেন, যখন নামাজ শুরু হয়ে যায় দৌড়ে দৌড়ে যাবে না, হেঁটে হেঁটে যাও, ধীরে ধীরে যাও, যেয়ে ইমাম সাহেবের সাথে যত রাকাত নামাজ পাবে পড়বা। আর যেটা ছুটে যায় সেটা নিজে নিজে পড়বা, আল্লাহপাক কবুল করে নেবে।
আল্লাহ বললেন জুমার নামাজের আযান যখন হয়ে যায় তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরের দিকে ধাবিত হও। এখানে জিকির বলতে বোঝানো হচ্ছে জুমার খুতবা। আল্লাহ বুঝাতে চাইলেন, জুমার খুতবা যাতে মিস না হয়ে যায়।
এজন্য জুমার খুতবাকে যেন-তেন মনে করা যাবে না, এটা ওয়াজিব। জুমার নামাজ যেমন ওয়াজিব তেমনি জুমার খুতবাও ওয়াজিব, খুতবা দেওয়া যেমন ওয়াজিব তেমনি খুতবা শোনাও ওয়াজিব।
জুমার দিনের ১৫ টি সুন্নত-যেভাবে পালন করবেন
- ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা
- মেসওয়াক করা
- উত্তম রূপে গোসল করা
- জয়তুনের তেল মালিশ করা
- সুগন্ধি ব্যবহার করা
- সবচেয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পরা
- আল্লাহর রাসূলের উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
- সূরা কাহাফ বেশি বেশি পাঠ করা
- মসজিদে আগে আগে যাওয়া
- পায়ে হেঁটে যাওয়া
- মসজিদের সবার জন্য জায়গা করে দেওয়া
- মসজিদে যখনই ঢুকবেন তখনই দুই রাকাত নামাজ পড়া
- কান খাড়া করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা
- যদি খুতবা শুনতে শুনতে ঘুম আসে, সে যেন বসার জায়গাটা চেঞ্জ করে বা মুখে পানি ছিটিয়ে আসে
- জুমার দিনে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করা
জুমার রাতের আমল-যেভাবে করবেন
জুমার রাত অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত, অনেকেই এ রাতে রাত জেগে ইবাদত করেন কারণ বিশেষ ফজিলতের রাত জুমার রাত। একটি হাদিসে পরিষ্কারভাবে নির্দিষ্ট করে শুধু এই রাত জেগে ইবাদত করা নিষেধ আছে। তেমনিভাবেএকইভাবে একটি হাদিসে শুধুমাত্র এই দিনে রোজা রাখা নিষেধ করা হয়েছে।
তবে হ্যাঁ আপনি সবসময় তাহাজ্জুদ পড়েন সে হিসাবে এটা পড়েন অনেক উত্তম কিন্তু নির্দিষ্ট করে আপনি সিয়ামের জন্য এই সময়টাকে নির্ধারণ করবেন না।
পরিশেষে
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জুমার দিনের বিভিন্ন সুন্নত ও ফজিলত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন যা কুরআন ও হাদিসের আলোকে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমি আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। এ ধরনের নিয়মিত পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে থাকুন। সবশেষে আমি আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্যতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url